BLANTERVIO103

আবারও প্রমাণিত হলো মানবতার ধারক-বাহক ছাত্রলীগ

আবারও প্রমাণিত হলো মানবতার ধারক-বাহক ছাত্রলীগ
Wednesday, April 22, 2020

বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস নামক এক অদৃশ্য শক্তির সঙ্গে আমরা লড়াই করছি। বলতে গেলে পৃথিবী বন্ধ হয়ে গেছে। যেসব জায়গা মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকত, সেগুলো দেখলে এখন ভূতুড়ে মনে হয়। প্রতিদিনের চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, আদালত বন্ধ, ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা, গণ-জমায়েতের উপর বিধিনিষেধ- এসব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এই অদৃশ্য শক্তি করোনা ভাইরাসের কারণে। এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের সঠিক ওষুধ এখনো আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় একা থাকা অথবা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।

পৃথিবীর অন্য দেশগুলোর ন্যায় বাংলাদেশের মানুষও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই চলছে। যে যার মতো ঘরে থাকার চেষ্টা করছেন। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে কমই বের হচ্ছেন মানুষজন। কিন্তু অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে দেশের অনেক মানুষ এখন কর্মহীন হয়ে পড়েছে। দরিদ্র পরিবারের লোকজনের খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবার খাদ্য নিশ্চিত করেছেন। আমাদের সরকারের মন্ত্রী, এমপি, জনপ্রতিনিধি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা যার যার মতো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। ব্যবসা বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাজার হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। দরিদ্র মানুষের জন্য এক কোটি রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করেছেন। তারা ১০ টাকায় চাল পাবে। বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, শেখ হাসিনার সরকার আমলে একটি মানুষও না খেয়ে থাকবে না।

যাই হোক, যে কথাগুলো লিখতে বসে এসব লিখলাম, এবার সেই মূল কথায় আসা যাক। করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। নিজেকে নিরাপদ রাখতেই বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। নিজেকে রক্ষার একমাত্র উপায় এটাই। অর্থাৎ চাচা আপন প্রাণ বাঁচা। বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এখন বোরো ধান কাটার মৌসুম চলছে। লকডাউন পালন করতে গিয়ে শ্রমিকরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারছেন না। ফলে কৃষকগণ (জমির মালিক) পড়েছেন মহাবিপদে। সেই সময় পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ যখন দেখি বিভিন্ন স্থানে ‘বিনা পারিশ্রমিকে কৃষকের ধান কেটে দিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’। ‘গরীব কৃষককে ধান কেটে সহাযোগিতা করলো ছাত্রলীগ, ‘রাতের আঁধারে অসহায় পরিবারের পাশে ছাত্রলীগ’। শুধু কি তাই যখন দেখি নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধক স্যানিটাইজার নিজেরাই তৈরি করে সারাদেশে বিতরণ করছে, মাস্ক বিতরণ করছে।

করোনা প্রতিরোধে ছাত্রলীগের ভূমিকা অনন্য। তখন গর্বে বুকটা ভরে উঠে। সমস্ত শরীরে শিহরণ জাগে এই ভেবে যে আমিও এই গর্বিত সংগঠনের একজন কর্মী ছিলাম। একসময় শুধু বাংলাদেশেরই নয়, উপমহাদেশের অন্যতম ও ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছিলাম। আমার বুকটা ভরে ওঠে যখন দেখি অসহায় ছিন্নমুল মানুষকে রান্না করা খাবার বিতরণ করছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। প্রসঙ্গক্রমে বলতেই হয়, বাংলাদেশে তো আরো অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ছাত্র সংগঠন আছে? তারা কোথায়? আজকেই কেবল মানবতার সেবায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগই একাই কাজ করছে। অথচ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও পারতো নিজেদের ঘরে আবদ্ধ রাখতে। ভাইরাস থেকে রক্ষার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাড়িতেই বসে থাকতে। কিন্তু তা করেনি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে তারা মানবতার সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করেছে প্রতিটি নেতাকর্মী। এটাই বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই হচ্ছে সত্যিকারের সোনার মানুষ। ছাত্রলীগের নেতাকর্মী কেউ কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছে। কেউ খাদ্য বিতরণ করছে গভীর রাতে। এখানেই আমার ছাত্রলীগ নিয়ে গর্ব। মানুষের এই দুযোর্গে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড দেখে ছাত্রজীবনে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে। ইচ্ছে করে করোনার কারণে শ্রমিক সংকট থাকা গ্রামের রহিম চাচাকে বলি, ‘চাচা আপনি চিন্তা করবেন না, আমরা আপনার জমির ধান কেটে ঘরে তুলে দেব। চাচা চিন্তা করবেন না, কোন পারিশ্রমিক দিতে হবে না-।

বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনা আপনাদের পাশে দাঁড়াতে আমাদের নিদের্শ দিয়েছেন। আপনারা বাঁচলে (কৃষক বাঁচলে, দেশ বাঁচবে) তবেই বাংলাদেশ বাঁচবে। ছাত্রলীগ নিয়ে আমার গর্বের শেষ নেই। তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য, একবার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলাম। তার আগে আমার পরিচয় আমি স্কুল জীবন থেকে ছাত্রলীগের কর্মী হয়ে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের ভোটের মাধ্যমে জাকসুর ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলাম। ১৯৯৪ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনা আমাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব দেন।

ছাত্রলীগ শুধু করোনাকালেই নয়, ছাত্রলীগ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এবং মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছে। ছাত্র সমাজের ন্যায্য দাবি আদায়ে জোরালো ভূমিকা রেখেছে। হলের সমস্যা নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে। যখনই অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে, তখনই রাজপথে সক্রিয় ছিল ছাত্রলীগ। এই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালের বন্যায় সময় বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছিল বাংলাদেশে এক কোটি মানুষ মারা যাবে। কিন্তু পরবর্তীতে বিসিসির প্রতিবেদন মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছিল জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে। সে সময়ে আমি ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলাম। দেশরত্ম শেখ হাসিনার নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন, সারাদেশে ছাত্রলীগের অফিস, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের হলগুলোতে রুটি-স্যালাইন বানানোর কারখানায় রূপান্তর হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রুটি-স্যালাইন বানিয়ে বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করেছিল লাখ লাখ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। অতীতের ধারাবাহিকতায় সেই স্বাক্ষর ছাত্রলীগ ধরে রেখেছে অনেকবার। সে কারণেই আজকে কৃষককে বিনাপারিশ্রমিকে ধান কেটে দিচ্ছে। আবার গভীর রাতে গিয়ে বলছেন, ‘বাড়িতে কেউ আছেন? আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার নিয়ে এসেছি’। see more

 
Share This Article :

TAMBAHKAN KOMENTAR

6022448487890513742